Header Ads

Header ADS

যার ব্যক্তিত্বের কাছে ঘৃণা পরােজিত হয়ে ভালবাসায় রুপান্তর হেয় আজ সই মাশরাফির জন্মদিন - Akter r Hossain


প্রিয়, তোমাকে ভালবাসি অশেষ
তুমি যে এক টুকরো বাংলাদেশ।

“দেশের তুলনায় ক্রিকেট অতি ক্ষুদ্র একটি ব্যাপার। একটি দেশের অনেক ছোট ছোট মাধ্যমের একটি হতে পারে খেলাধুলা; তার একটি অংশ ক্রিকেট। ক্রিকেট কখনও দেশপ্রেমের প্রতীক হতে পারে না। সোজা কথায়-খেলাধুলা হলো বিনোদন।”

“খেলা কখনও একটি দেশের প্রধান আলোচনায় পরিণত হতে
পারে না। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আছে যা সমাধান বাকি। সেখানে ক্রিকেট নিয়ে পুরো জাতি, রাষ্ট্র এভাবে এনগেজ হতে পারে না। আজকে আমাদের সবচেয়ে বড় তারকা বানানো
হচ্ছে, বীর বলা হচ্ছে, মিথ তৈরি হচ্ছে। এগুলো হলো বাস্তবতা থেকে পালানোর ব্যাপার।”

“আমি ক্রিকেটার, একটি জীবন কি বাঁচাতে পারি? একজন ডাক্তার পারেন। কই, দেশের সবচেয়ে ভালো ডাক্তারের নামে কেউ তো একটি হাততালি দেয় না! তাদের নিয়ে মিথ তৈরি করুন, তারা আরও পাঁচজনের জীবন বাঁচাবেন। তারাই তারকা। তারকা হলেন লেবাররা, দেশ গড়ে ফেলছেন। ক্রিকেট দিয়ে আমরা কি বানাতে পারছি? একটি ইটও কি ক্রিকেট দিয়ে বানানো যায়? একটি ধান জন্মায় ক্রিকেট মাঠে? যারা ইট দিয়ে দালান বানায়, কারখানায় ওটা-ওটা বানায় বা ক্ষেতে ধান জন্মায়, তারকা হলেন তারা।”

“বীর হলেন মুক্তিযোদ্ধারা। আরে ভাই, তারা জীবন দিয়েছেন। জীবন যাবে জেনেই ফ্রন্টে গেছেন দেশের জন্য। আমরা কি করি? খুব বাজে ভাবে বলি- টাকা নেই, পারফর্ম করি। একটি অভিনেতা, গায়কের মতো পারফর্মিং আর্ট করি। এর চেয়ে এক ইঞ্চি বেশিও না। মুক্তিযোদ্ধারা গুলির সামনে এইজন্য দাঁড়ায় নাই যে জিতলে টাকা পাবে। কাদের সঙ্গে কাদের তুলনা রে! ক্রিকেটে বীর কেউ থেকে থাকলে রকিবুল হাসান, শহীদ জুয়েলরা।”

“রকিবুল ভাই ব্যাটে জয় বাংলা লিখে খেলতে নেমেছিলেন,
অনেক বড় কাজ। তার চেয়েও বড় কাজ, বাবার বন্দুক নিয়ে ফ্রন্টে চলে গিয়েছিলেন। শহীদ জুয়েল ক্রিকেট রেখে ক্র্যাক প্লাটুনে যোগ দিয়েছিলেন। এটিই হলো বীরত্ব। ফাস্ট বোলিং
সামলানার মধ্যে রোমান্টিসিজম আছে, ডিউটি আছে। বীরত্ব নেই।”

“আমি বলি, এই যারা ক্রিকেটে দেশপ্রেম দেশপ্রেম বলে
চিৎকার করে, এরা সবাই যদি একদিন রাস্তায় কলার খোসা ফেলা বন্ধ করত, একটি দিন রাস্তায় থুথু না ফেলত বা একটি
দিন ট্রাফিক আইন মানত, দেশ বদলে যেত। এই প্রবল এনার্জি ক্রিকেটের পেছনে ব্যয় না করে নিজের কাজটা যদি সততার
সঙ্গে একটি দিনও সবাই মানে, সেটাই হয় দেশপ্রেম দেখানো।
আমি তো এই মানুষদের দেশপ্রেমের সংজ্ঞাটাই বুঝি না!”

“কিছু হলেই আমরা বলি, এই ১১ জন ১৬ কোটি মানুষের
প্রতিনিধি। আন্দাজে! তিন কোটি লোকও হয়ত খেলা দেখেন না। দেখলেও তাদের জীবন-মরণ খেলা না। মানুষের
প্রতিনিধিত্ব করেন রাজনীতিবিদেরা, তাদের স্বপ্ন ভবিষ্যত অন্য জায়গায়। এই ১১ জন মানুষের ওপর দেশের মানুষের ক্ষুধা, বেঁচে থাকা নির্ভর করে না। দেশের মানুষকে তাকিয়ে থাকতে হবে একজন বিজ্ঞানী, একজন শিক্ষাবিদের দিকে।”

--------- মাশরাফি
........
এই কথাগুলো যেনতেন কোন সাধারণ ব্যক্তির মুখ দিয়ে নিঃসৃত  হতে পারেনা। এই কথাগুলো কেবল সেই সকল দার্শনিকদের মুখ থেকেই বের হওয়া সম্ভব যাদের সমস্ত হৃদয় জুড়ে আছে দেশ ওদেশের মাটির প্রতি সুগভীর ভালবাসা।

আপনি এই মানূষটাকে ভালবাসতে না পারলেও অন্তত ঘৃণা করতে পারবেন না।

একজন মুক্তিযোদ্ধা, সে মুক্তিযুদ্ধাই। মুক্তিযুদ্ধার সাথে কারো তুলনা করাটা বোকামিই।  মুক্তিযুদ্ধার মৃত্যুর নিশ্চয়তা জেনেও যুদ্ধ করেছেন। তাঁদের সাথে ক্রিকেটার বা অন্য কারো তুলনা করতে আমার মন সায় দেয় না  অথবা সেই স্পর্ধা আমার নেই।

কিন্তু যুগের পরিপ্রেক্ষিতে, যারা  মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেন নি তাদের মধ্যে যদি একজন মাত্র দেশপ্রেমিক বা একজন মাত্র বীর নির্ধারণ করততে বলা হয় তাহলে আমার মতে সেই একজনই হবেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।

কারণ,  সবারই জিবনের একটি মায়া থাকে। সেই কারণেই কেউ এক বা দুইবার  অপারেশন হলে খেলাধুলা ছেড়ে দেন। এটাই স্বাভাবিক হওয়ার কথা।

কিন্তু মাশরাফির চিন্তা ভিন্ন, তিনি বিশ্বমানচিত্রে ক্রিকেট দিয়ে বাংলাদেশের পতাকে উজ্জ্বল করে তুলে ধরার ধরার জন্য জিবনের মায়া ভুলে বাইশ গজে লড়ে যান অফুরান দেশপ্রেমের শক্তি দিয়ে। দেশপ্রেমের শক্তি কোন সাধারণ শক্তি নয়। সেই শক্তির সামনে কোন কোন শক্তিই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে নআআ।

গুরু মাশরাফি তেমন  শক্তিতে শক্তিমান  তাই  সাত সাতটি অপারেশনও তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। কারণ, তার হৃদয় জুড়ে আছে দেশের প্রতি সুগভীর  ভালবাসা। ভালবাসার শক্তি যে অসীম। সেই অসীম বলে বলীয়ান হয়েই ভাঙা পা নিয়েই দেশের জন্য লড়ে যান নিজেকে নিঙরে দিয়ে।

এই মানুষটাকে আজ পুরো দেশের মানুষই ভালবাসে। ভালবাসাটা তিনি এমনি এমনিই পাননি।  এই ভালবাসাটা পাওয়ার আগে তিনি ভালবাসা বিলিয়েছেন। এই তোহ সেদিনের ঘটনা। গত বিপিএলের কোন একটি ম্যাচে একজ। অতি সাধারন, একদম অখ্যার একজন প্লেয়ার মাশরাফির সাথে ঝগড়া বাধায়। প্লেয়ারটির নাম মনে করতে পারছিনা। যেখানে মাশরাফিকে দেশের সবচেয়ে বড় তারকারা মাথা নীচ করে সম্মান জানিয়ে কথা বলে সেখানে ঐ প্লেয়ারটি মাশরাফির দিকে তেড়ে আসে। সাহস কত। ফেসবুকে সাথে সাথেই শুরু হয় তোলপাড়।

কিন্তু মাশরাফি ফেসবুকে ভিডিও আপলোড দিয়ে বলে, এইটা খুব সাধারণ একটি ঘটনা। তিনি সবার কাছে অনুরোধ করেন বিষয়টা যেন আর না বাড়ায়। তারপর মাশরাফি নিজেও ওই প্লেয়ারটির কাছে ক্ষমা চান।

মানুষটা মাশরাফি বলেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।মানুষটা মাশরাফি বলেই সম্পূর্ণ নেগেটিভ জিনিষটাকে পজিটিভ করে নিতে পেরেছেন।

আহা! কত সৎ, কতটা বিনয় হৃদয়ের অধিকারী, কতটা শুভ্র-সুন্দর ও শুদ্ধ  চিত্তের মানুষ।

এই মানুষটাকে আপনি ভাল নাও বাসতে না পারেন, কিন্তু ঘৃণা অন্তত করতে পারবেন না। তার ব্যাক্তিত্বের কাছেই আপনার ঘৃণা পরাজিয় হয়ে ভালবাসায় রুপান্তর হবে।

এই প্রিয় মানুষটার সাথে যদি দেখা করার সুযোগ হয় তাহলে খুব টাইট করে একটা হাগ দেয়ার ইচ্ছে আছে।
..
গুরু কি দিবো উপহার তোমায়
ভালবাসা ছাড়া যে এই গরিবের অন্য কিছু নাই

প্রিয়, তোমাকে ভালবাসি অশেষ
তুমি যে এক টুকরো বাংলাদেশ

ভালবাসি মাশরাফি ভাই....

শুভ জন্মদিন গুরু

No comments

Powered by Blogger.