Header Ads

Header ADS

বিশ্বকাপ ও আমার ভাবনা: এক - আকতার আর হোসাইন



মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ কোন পজিশনে বেটার..?

প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করেন মাহমুদুল্লাহ। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে তিনিই আমাদের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান। মনে আছে, ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড এর বিপক্ষে মাহমুদুল্লাহর ব্যাক টু ব্যাক দুইটি সেঞ্চুরির কথা?সেবার বাংলাদেশ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। তাতে মাহমুদুল্লাহ অবদান ছিল অনস্বীকার্য।

ম্যাচ দুটির কথা একটু মনে করিয়ে দিই।

বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড। ডু অর ডাই ম্যাচ।

 ২.১ ওভারেই দলের দুই ওপেনার বিদায় নিয়েছেন জেমস অ্যান্ডারসন এর বলে।  স্কোরবোর্ডে ৮ রান। মাহমুদুল্লাহ ক্রিজে আসলেন।  সৌম্যকে নিয়ে গড়লেন ৮৬ রানের পার্টনারশিপ।  স্টুয়ার্ড ব্রড আর আন্ডাসনরা কেউই মাহমুদুল্লাহর সামনে সুবিধা করতে পারেনি। সৌম্য আর সাকিব ৫ রানের ব্যবধানে আউট। স্কোর্বোর্ডে ৯৯-৪ (২১.৫ ওভার)। মাহমুদুল্লাহ মুশফিককে নিয়ে দলের হাল ধরলেন আবারওও। ১৩৯ রানের পার্টনারশিপ। দলীয় ২৪০ রানের সময় ২টি ছক্কা আর ৭টি চারে ১৩৮ বলে ১০৩ রান করে মাহমুদুল্লাহ আউট হন।  মনে রাখিয়েন, মাহমুদুল্লাহ যখন ক্রিজে নামেন তখন দলের রান ছিল মাত্র ৮। তার মানে মাহমুদুল্লাহ সৌম্য, সাকিব  আর মুশফিককে নিয়ে মোট ২৩২ রানের পার্টনারশিপ করে। মাহমুদুল্লাহ আর মুশির কাঁধে ভর করে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ করে ২৭৫ রান। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ১৫ রানে জিতেছিল।

৫.৪ ওভারে দলীয় ২৭ রানেই দুই ওপেনারের বিদায়। মাহমুদুল্লাহ নেমে সোম্যকে নিয়ে গড়েন ৯০ রানের পার্টনারশিপ। তারপর একে একে সাকিব, মুশফিক, সাব্বিররা আউট হলেও এক প্রান্ত ঠিকই আগলে রাখেন তিনি।

সাকিবও তিনে ভালো করবে বলে বিশ্বাস। তবে মাহমুদুল্লাহ বেটার হতো। মাহমুদুল্লাহ যেভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে পারে এটা আমাদের টিমে কেউই খেলতে পারে না। সেই ম্যাচে বাংলাদেশ করে ২৮৮ রান। আর মাহমুদুল্লাহ ৩টি ছয় ও ১৩টি চারে  ১২৩ বলে অপরাজিত  ১২৮ রান করেন। তারমানে মাহমুদুল্লাহ। তারমানে মাহমুদুল্লাহ ক্রিজে থাকাকালীন মোট ২৬১ রান আসে।
.
.

মাহমুদুল্লাহ তখন যদিও চারে খেলেছিল তা তিনে খেলার মতোই। কেননা তাঁকে দুটি খেলাতেই পাঁচ ওভারের মধ্যে নামতে হয়েছিল।

এখন আমার অপিনিয়ন হল, বিশেকাপে মাহমুদুল্লাহকে তিনে খেলানো হোক।

বর্তমানে তিনে খেলছে সাকিব। সাকিব নিজেও জানিয়ে দিয়েছে এটা তার প্রিয় পজিশন। সো আমরা এগুলো বলে লাভ নেই। মনে হয় না সাকিবকে তিন নম্বর থেকে সরানো হবে।

সাকিব অন্য পজিশন থেকে তিনেই  সবচে বেশি ভালো খেলে। আর এই পজিশনে কমপক্ষে ১০ টি ম্যাচ খেলেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সাকিবই সেরা।  পরিসংখ্যান তাই বলছে। তিনে সাকিব ১4টি ইনিংস খেলে ৪১ গড়ে  করেন ৪৬১ রান যেখানে তার মোট গড় ৩৫। ৪৬১ রান করার পথে  ফিফটি করেন ছয়টি। আর তামিমের সাথে সাকিবের পার্টনারশিপটাও বেশ জমে উঠে।

বিশ্বকাপে  সাকিব তিনে আরো  ভালো পারফর্মেন্স  করবে বলে আমার বিশ্বাস।

তবে  মাহমুদুল্লাহ এখানে বেটার হতো। যেকোন দলে তিন নম্বরে  টেকনিক্যালি সেরা প্লেয়াররাই খেলে থাকে সাধারনণত। মাহমুদুল্লাহ যেভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে পারে এটা আমাদের টিমে কেউই খেলতে পারে না।

মাহমুদুল্লাহকে বর্তমানে ছয়ে খেলানো হয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় ৫ নম্বরেও নামতে পারে।

আর এই জায়গাটে মানে  পেছনে একজন ম্যাচ ওইনার প্লেয়ার দরকার যে মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে পারবে আবার প্রয়োজনের সময় মেরেও খেলতে পারবে। আর সবচেয়ে বড় কথা হল এই জায়গাটা মারাত্মক চাপের। বলতে গেলে ম্যাচের হারজিত নির্ধারণই হয়ে থাকে এখানে।  চাপের কারণে এই জায়গাটাতে অনেক ভালো খেলোয়াড়েরা ভালো খেলতে পারে না।মাহমুদুল্লাহ পরিক্ষিত ক্রিকেটার।   এই হিসেবে পেছনে মুশফিক ছাড়া মাহমুদুল্লাহর মত বেটার আর কেউ নেই।কাজেই মাহমুদুল্লাহকে পেছনে খেলানো আর সাকিবকে তিনে খেলানোর যৌক্তিকতা আছে।

যাইহোক, আমি টিম সিলেক্টর হলে তিনে মাহমুদুল্লাহকেই খেলাতাম। ৪ ও পাঁচে মুশি ও সাকিব।
কেন রাখতাম তা উপরের লেখাতেই পরিষ্কার করে দিয়েছি।

 এই তো,  গতকালই ভারতের সাবেক ওপেনার ও ক্রিকেট বিশ্লেষক বাংলাদেশকে নিয়ে প্রেডিকশন দেন। সেখানে তিনি মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে আলাদাভাবে কিছু কথা বলেন।

"মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে তাঁর একটি
পর্যবেক্ষণ আছে। তাঁকে উঁচু মাপের
ব্যাটসম্যান বলেই মনে করেন তিনি। কিন্তু
মাহমুদউল্লাহকে বাংলাদেশ ঠিকভাবে
ব্যবহার করতে পারছে না, এমনটাই মনে
করেন চোপড়া।" এই অংশটা প্রথম আলো থেকে নেয়া
.

আরেকটা কথা, সিনিয়রদের মধ্যে মাহমুদুল্লাহর স্ট্যাট একদম সাদামাটা। স্ট্যাট দেখলে আর কয়টা সাধারণ প্লেয়ারের মতোই তাঁকে মনে হয়। একটু উপরের দিকে খেললে মাহমুদুল্লাহর রান হয়তো তামিমের চেয়েও বেশি হত। বেশি না হলেও ছয় হাজারের আশেপাশেই থাকতো বলে আমি মনে করি।

তিনি সব সময় দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। সবসময় দলের জন্য তিনি উজার করে দেন। তার নির্দিষ্ট জায়গা নেই। কখনো খেলেন তিনে, কখনো চারে কখনো পাঁচে, কখনো ছয়ে।  বেশির ভাগ সময় তাঁকে খেলতে হয় ৭ নম্বরে। মাহমুদুল্লাহ টেকনিক্যালি খুব ভালো ও একজন ফ্লেক্সিবল ক্রিকেটার বলেই তাঁকে এত্তসব পজিশনে খেলিয়ে অন্যদেরকে ভালো করার সুযোগ করে দেয়া হয়।

 দলের জন্য তার এই বৃহৎ ত্যাগ  তত্যাগ বাইরে থেকে আমাদের চোখে পড়ে না। বাংলাদেশের ম্যাচে তার অবদান চোখে পড়ে না। এজন্যেই ছেলেটাকে বলা হয় 'সাইলেন্ট কিলার'। আর আজকের এই বাংলাদেশের বাংলাদেশ হয়ে উঠতে তার রয়েছে বিরাট অবদান।  

এই কথাগুলো বলার উদ্দেশ্য। নতুনরা যাতে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে ফলো করে, তার সেক্রিফাইস থেকে শিক্ষা নেয়। পঞ্চপাণ্ডব থাকাকালীন যদি  নতুনরা শিখতে না পারে(ম্যাচ রিডিং, হার্ড ওয়ার্ক, ট্যাকনিক, আর বিশেষ করে সেক্রিফাইস) তাহলে বাংলাদেশ এক যুগ পিছিয়ে পড়বে।  

খেলবে টাইগার, জিতবে দেশ।


ব্লগাররা ফেসবুকে আমাকে এড দিতে পারেন। কোন ব্লগার এড দিলে অবশ্যই মেসেজ করে জানাবেন যাতে চিনতে পারি। ধন্যবাদ।

 Akter R Hossain লিখে সার্চ দিলেই পেয়ে যাবেন। সুবিধার্তে লিংক দিলাম: www.facebook.com/arh100

লেখাটি সামহোয়ারইনব্লগ এ পড়ুন।

No comments

Powered by Blogger.